ফ্যাশন ডিজাইনার হতে হলে কি করতে হবে জানুন বিস্তারিত

ফ্যাশন ডিজাইনার হবেন এজন্য কি কি করতে হবে, পড়তে কত টাকা লাগবে, কোন কলেজে পড়তে পারবেন, কি যোগ্যতা লাগবে সবকিছু সম্পর্কে জানতে পারবেন।আজকের এই পোস্টে ফ্যাশন ডিজাইনার হতে হলে কি কি প্রয়োজন আপনাকে কি কি করতে হবে সমস্ত বিষয়ে জানানো হবে তাই ফ্যাশন ডিজাইন বিষয়ে জানতে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
ফ্যাশন-ডিজাইনার-হতে-হলে-কি-করতে-হবে
আপনি যদি ফ্যাশন ডিজাইনার হতে চান তাহলে আপনার ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কে জানা জরুরী।আপনি যদি এই বিষয়ে কিছু না জেনে থাকেন এবং এই বিষয়ে জানতে চান তাহলে আপনি একদম ঠিক জায়গায় এসেছেন। ফ্যাশন ডিজাইন কি,ফ্যাশন ডিজাইনার এর কাজ কি,ফ্যাশন ডিজাইন করে কত টাকা আয় হয় সব কিছু জানতে নিচের লিখা গুলো পড়ে নিন।

পেজ সূচিপত্রঃ ফ্যাশন ডিজাইনার হতে হলে কি করতে হবে

ফ্যাশন ডিজাইনার হতে হলে কি করতে হবে

অনেকে ফ্যাশন ডিজাইনার হতে চাই এবং তাদের মাথায় প্রথম প্রশ্ন আসে ফ্যাশন ডিজাইনার হতে হলে কি করতে হবে।ফ্যাশন ডিজাইন করে অনেকের সফল ফ্যাশন ডিজাইনার হয়েছে। ফ্যাশন ডিজাইনিং ক্যারিয়ার হিসেবে এবং পেশা হিসেবে খুব ভালো। একজন সফল ফ্যাশন ডিজাইনার হতে হলে আপনাকে অবশ্যই ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। এর পাশাপাশি আপনার মধ্যে ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার যোগ্যতা থাকাও খুবই প্রয়োজন। 
এছাড়া ফ্যাশান ডিজাইন সম্পর্কিত বিভিন্ন কোর্স এবং ফ্যাশান ডিজাইন নিয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা আপনাকে করে তুলতে পারে একজন দক্ষ ও সফল ফ্যাশন ডিজাইনার। ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনার জন্য রয়েছে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে আপনি ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়ে দক্ষ হয়ে গড়ে তুলতে পারেন আপনার ক্যারিয়ার একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে। তবে সবকিছুর পূর্বে আপনার জানা দরকার ফ্যাশন ডিজাইন আসলে কি এবং এর ফ্যাশন ডিজাইনারদের কি ধরনের কাজ করতে হয় সম্পর্কে জানতে নিচে পড়ুন।

ফ্যাশন ডিজাইন কি?

ফ্যাশন ডিজাইন হচ্ছে একটি সৃজনশীল পেশা। ফ্যাশন ডিজাইন কে সৃজনশীল পেশা বলার কারণ মূলত নতুন নতুন আঙ্গিকে পোশাক থেকে আনুষাঙ্গিক সামগ্রী ইত্যাদি ডিজাইন তৈরি করা, যার সম্পূর্ণ সৃজনশীল চিন্তাধারার মাধ্যমে তৈরি করা হয়।সৃজনশীলতা বলা যায় ফ্যাশন ডিজাইনের পূর্ব শর্ত। কেননা একজন ফ্যাশন ডিজাইনার সৃজনশীল না হলে কখনোই ফ্যাশন ডিজাইনার হতে পারবে না।সৃজনশীলতার মনোভাব থেকেই মূলত ফ্যাশন ডিজাইনাররা নিত্যনতুন ডিজাইন তৈরি করে থাকে। 

ফ্যাশন ডিজাইন শিল্প, নান্দনিকতা, সংস্কৃতি এবং ট্রেন্ডের মিশ্রণে নতুন ডিজাইন তৈরি করে। ফ্যাশন ডিজাইন মূলত মানুষের ব্যক্তিত্ব ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে সাহায্য করে। ফ্যাশন ডিজাইন পোশাক থেকে শুরু করে অলংকার, জুতা, ব্যাগ, বেল্ট, স্কার্ফ ইত্যাদি আরো নানান বিষয়ে করা হয়। ফ্যাশন ডিজাইন কি এ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন তবে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে ফ্যাশন ডিজাইনার এর কাজ কি কি, ফ্যাশন ডিজাইনার কে কি  কাজ করতে হয়? এ সম্পর্কে জানতে নিচে আরো পড়ুন।

ফ্যাশন ডিজাইনার এর কাজ কি?

অনেকে আছে ফ্যাশন ডিজাইনার এর কাজ বলতে শুধু কাপড় তৈরি করাকে বোঝে। কিন্তু মোটেও বিষয়টা এমন নয়, ফ্যাশন ডিজাইনাররা মূলত শুধু কাপড় নিয়ে কাজ করে না বরং তারা গহনা, ব্যাগ, বেল্ট, স্কার্ফ, জুতা বিভিন্ন বিষয় বস্তু নিয়ে কাজ করে থাকে। ফ্যাশন ডিজাইন মূলত একটা সৃজনশীল পেশা তাই ফ্যাশন ডিজাইনাররা সৃজনশীল চিন্তাধারার কাজ করে থাকে।  
ফ্যাশন ডিজাইন এর মূল কাজ হলো নতুন ও আকর্ষণীয় পোশাক এবং আনুষঙ্গিক ডিজাইনের তৈরি করা। ফ্যাশন ডিজাইনাররা মূলত বর্তমান ফ্যাশন ট্রেন্ড বুঝে ভবিষ্যতে সবার পছন্দের স্টাইল সম্পর্কে গবেষণা করে। মানুষের কোন রং,ফেব্রিক্স এবং নকশা বেশি পছন্দ এ বিষয়ে গবেষণা করা। পোশাক থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়বস্তুর ডিজাইন তৈরি করা। 

ডিজাইন তৈরি বস্তুর যেমন পোশাকের কাটিং, সেলাই ,ডিটেইলিং নিয়ে কাজ করা। ফ্যাশন ডিজাইনারদের তৈরিকৃত প্রথম স্যাম্পল পরীক্ষা করা এবং সেটার সৌন্দর্য, আরামদায়ক এবং কার্যকারিতা পরীক্ষা করা। তৈরিকৃত পোশাক বা বস্তুর প্রোডাকশন ও মার্কেটিং এর বিষয়ে কাজ করা।
ডিজাইন অনুযায়ী পোশাকের উৎপাদন এবং ফ্যাশন শো অনলাইন প্লাটফর্ম ও রিটেইল স্টোর এর মাধ্যমে সেই সমস্ত ডিজাইন গুলোকে প্রচার করার ব্যবস্থা করা। এছাড়া গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী পোশাক বা বিভিন্ন বস্তুর ডিজাইন তৈরি করে দেওয়া এবং নতুন ট্রেন্ড অনুযায়ী পোশাক ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে আপডেট প্রদান করা। ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়ার জন্য আপনার কি যোগ্যতা লাগবে জানতে হলে নিচে আরো পড়ুন।

ফ্যাশন ডিজাইন পড়ার যোগ্যতা

অনেকে ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই এবং ফ্যাশন ডিজাইনার হতে চাই। এজন্য অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়ার জন্য কি আলাদা কোন যোগ্যতা লাগবে? তো চলুন আজকে জেনে নিন ফ্যাশন ডিজাইন পড়ার জন্য কি কি যোগ্যতার প্রয়োজন রয়েছে। আপনি ফ্যাশন ডিজাইনের হতে পারবেন কিন্তু এজন্য আপনার ফ্যাশন ডিজাইনার পড়ার জন্য কিছু যোগ্যতা লাগবে।
ফ্যাশন-ডিজাইনার-হতে-হলে-কি-করতে-হবে
ফ্যাশন ডিজাইনের পড়ার জন্য বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হতে হয়। সে সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে এবং যোগ্যতার প্রয়োজন রয়েছে। ফ্যাশন ডিজাইন করার জন্য আন্ডার গ্রাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় আপনার ন্যূনতম জিপিএ ২.৫০ থাকতে হবে। গ্রাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আপনার সিজিপিএ ২.৫০ সহ স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে।

এমএসসি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ও এম এ সি ফ্যাশন ডিজাইনের প্রাসঙ্গিক শাখার জন্য আপনার স্নাতক ডিগ্রী প্রয়োজন হবে। এছাড়া উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ হলে আপনি ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন।এছাড়াও ফ্যাশন ডিজাইন করার জন্য আপনাকে অবশ্যই ভালো সেলাই জানতে হবে সে সাথে ভালো ছবি আঁকা জানতে হবে যেন আপনি ভালো নকশা তৈরি করতে পারেন।

সরকারি ফ্যাশন ডিজাইন কলেজ

আধুনিক যুগের সাথে ফ্যাশন ডিজাইন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেকেই ফ্যাশন ডিজাইন কে নিজের ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিচ্ছে। আপনিও ফ্যাশন ডিজাইন কে নিজের পেশা বা ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারেন। অনেকে মনে করে ফ্যাশন ডিজাইন পড়তে হলে অনেক টাকার প্রয়োজন এবং এর খরচ অনেক বেশি। কিন্তু আপনি যদি সরকারি কলেজে ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করেন তাহলে এই খরচ কমে আসতে পারে অনেক নিচে। 

বাংলাদেশের সরকারি ফ্যাশন ডিজাইন কলেজের সংখ্যা সীমিত। তবে বেশ কয়েকটি সরকারি কলেজ রয়েছে যেখান থেকে আপনি কম টাকাতে ফ্যাশন ডিজাইন শিখতে পারবেন। এছাড়াও অপনি বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ফ্যাশন ডিজাইন শিখতে পারবেন। সেখানে বেশ কয়েকটি সরকারি ফ্যাশন ডিজাইন কলেজ রয়েছে। আজকে আপনাকে জানাবো বেশ কয়েকটি বাংলাদেশ ও ভারতের সরকারি ফ্যাশন ডিজাইন কলেজ এবং এই কলেজগুলো কোথায় রয়েছে।

বাংলাদেশের সরকারি ফ্যাশন ডিজাইন কলেজ

  • বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ঃ এটি ঢাকায় অবস্থিত এবং এখানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ও ফ্যাশন ডিজাইন এর উপরে উচ্চতর শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে।
  • ঢাকা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজঃ এটি ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থিত এবং এখানে ইঞ্জিনিয়ারিং অফ ফ্যাশন ডিজাইনের বিভিন্ন প্রোগ্রাম দেয়া হয়ে থাকে।
  • রাজশাহী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজঃ এটি রাজশাহীতে অবস্থিত এবং এখানে টেক্সটাইল প্রোডাকশন ও ফ্যাশন ডিজাইনের উন্নত শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে।
  • ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজঃ এটি ফরিদপুরে অবস্থিত এবং এখানে ফ্যাশন ডিজাইন এন্ড অ্যাপেল ইঞ্জিনিয়ারিং একটি বিভাগ রয়েছে যেখানে ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে।
  • সিলেট টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজঃ এটি সিলেটে অবস্থিত এবং এইখানে টেক্সটাইল ডিজাইন ও ইনোভেশন শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে।
  • বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজঃ এটি দক্ষিণাঞ্চলের বরিশালে অবস্থিত এবং এখানে টেক্সটাইল প্রক্রিয়াকরণ ও শিলায় প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে।
  • শহীদ এস এ মেমোরিয়াল ফ্যাশন ডিজাইন এন্ড টেক্সটাইল কলেজঃ এ কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি কলেজ এবং এইখানে ফ্যাশন ডিজাইনার টেক্সটাইল বিষয়ে অনার্স কোর্স প্রদান করা হয়ে থাকে।
  • খুলনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজঃ এটি খুলনায় অবস্থিত এবং এইখানে টেক্সটাইল ডিজাইন ও ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কিত শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে।
  • ফ্যাশন ডিজাইন ট্রেনিং ইনস্টিটিউটঃ এটি নরসিংদীতে অবস্থিত এবং এখানে ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কিত শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে।

ভারতের সরকারি ফ্যাশন ডিজাইন কলেজ

ভারতের অন্যতম সরকারি ফ্যাশন ডিজাইন কলেজ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজি এর বিভিন্ন শাখা রয়েছে ভারতের বিভিন্ন বিভাগ গুলোতে। চলুন জেনে নিন কোন বিভাগে এই সরকারি ফ্যাশন ডিজাইন কলেজটি রয়েছে।
  • ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজিঃ এটি দিল্লিতে অবস্থিত এবং এটি ভারতের ফ্যাশন ডিজাইন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি।
  • ন্যাশনাল ইনস্টিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজিঃ এ প্রতিষ্ঠানটি মুম্বাই এ অবস্থিত এবং এটি ফ্যাশন ডিজাইন উচ্চতা শিক্ষা প্রদান করে থাকে।
  • ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজিঃ এটি বেঙ্গালুরুতে অবস্থিত এবং এখানে ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে।
  • ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজিঃ এটি চেন্নাইয়ে অবস্থিত এবং এই প্রতিষ্ঠানে ফ্যাশন ডিজাইনের উচ্চতার শিক্ষা প্রদান করা হয়।
  • ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজিঃ এটি হায়দ্রাবাদে অবস্থিত এবং এখানে ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে।
  • ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজিঃ এটি কলকাতায় অবস্থিত এবং এটি ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করে।
  • ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজিঃ এটি গান্ধীনগরে অবস্থিত এবং এখানে ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করা হয়।
  • ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজিঃ এ প্রতিষ্ঠানটি পাটনায় অবস্থিত এবং এখানে ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কে উচ্চ শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে।
  • ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজিঃ এটির রায়বরেলিতে অবস্থিত এবং এখানে ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া হয়ে থাকে।
  • ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজিঃ এ প্রতিষ্ঠানটি শিলংয়ে অবস্থিত এবং এখানে ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করা হয়।
  • ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজিঃ এটি কানপুরে অবস্থিত এবং এর প্রতিষ্ঠানের ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কে পাঠদান করা হয়ে থাকে।
  • ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজিঃ এটি ভুবনেশ্বর এ অবস্থিত এবং এই প্রতিষ্ঠানে ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কে উচ্চতর শিক্ষা প্রদান করে দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়ে থাকে।

ফ্যাশন ডিজাইন ইউনিভার্সিটি কোথায়

অনেকে ফ্যাশন ডিজাইন করার জন্য ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে চাই। বাংলাদেশে এমন কিছু ইউনিভার্সিটি রয়েছে যেখান থেকে আপনি খুব সহজেই ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন। চলুন তাহলে জেনে নিন বাংলাদেশের ফ্যাশন ডিজাইন ইউনিভার্সিটি কোনগুলো এবং এগুলো কোথায় রয়েছে।

১। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সটাইল (BUTEX)
  • ঠিকানা: ৯২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ এভিনিউ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮, বাংলাদেশ
  • ফোন নাম্বার:+88029114260
  • ফ্যাক্স:+88029124255
  • ইমেইল: info@butex.edu.bd 
আবেদন প্রক্রিয়াঃ বিএসসি ফ্যাশন এবং ডিজাইন ডিগ্রী প্রোগ্রামের আপনি ভর্তি হতে পারবেন। তবে বুটেক্স এ ভর্তির জন্য শুধুমাত্র এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫.০০ নম্বর পেতে হবে। এছাড়াও লিখিত পরীক্ষা দিয়ে মেধা চাচার মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের ভর্তি নেয়া হয়।

২। বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি (BUFT)
  • ঠিকানা: এসআর টাওয়ার, ১০৫ উত্তরা মডেল টাউন, সেক্টর ৭, ঢাকা-১২৩০
  • টেলিফোন: 58950986,58950987,48950535
  • ইমেইল: info@buft.edu.bd
আবেদন প্রক্রিয়াঃ বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন টেকনোলজি তে বি.এস.সি ফ্যাশন ডিজাইন ও প্রযুক্তি এবং এম.এস.সি ফ্যাশন ডিজাইনের ভর্তি হতে পারবেন। এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরাই শুধুমাত্র এইখানে আবেদন করতে পারবেন। আমাদের বাড়ির সকল পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষার অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভালো ফলাফলের ক্রোমঅনুযায়ী ভর্তির সুযোগ প্রদান করা হবে।

৩। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড রিসার্চ (NITER)
  • ঠিকানা: নয়ারহাট, সাভার, ঢাকা- ১৩৫০ 
  • ফোন নম্বর:+8801755060275
  • ফ্যাক্স: +088027791972
  • ইমেইল:info@niter.edu.bd
  • অধিভুক্ত: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আবেদন প্রক্রিয়াঃ এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এখানে বি.এস.সি ফ্যাশন ডিজাইন এবং অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হতে পারবে।

৪। শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অফ ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি (SMUCT)
  • ঠিকানা: বাড়ি#০১, রোড#১৪, সেক্টর#১৩, উত্তরা, ঢাকা ১২৩০
  • ফোন নম্বর:+88027912713,+88027972714
  • ফ্যাক্স:+888915308
  • মোবাইল:+8801988887700-18
  • ইমেইল:info@smuct.edu.bd
আবেদন প্রক্রিয়াঃ ফ্যাশন ডিজাইন এবং প্রযুক্তিতে অনার্স এবং ফ্যাশন ডিজাইনে মাস্টার্স অফ আর্টস এ ভর্তি হতে পারবেন।

৫। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন এবং ডিজাইন প্রযুক্তি
  • ঠিকানা: ৩/গলি, শ্যামলী, রোড নাম্বার-১, ঢাকা-১২০৭, বাংলাদেশ 
  • ফোন নম্বর:+8801915670540,+8801629171717,+8801629181818

ফ্যাশন ডিজাইন কোর্স বাংলাদেশ

বর্তমানে ফ্যাশন ডিজাইনার কোর্সের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আপনি চাইলে ফ্যাশন ডিজাইন সরকারি বেসরকারি যেকোন প্রতিষ্ঠান থেকে করতে পারেন। তবে ফ্যাশন ডিজাইনার কোর্স করতে হলে আপনাকে অবশ্যই একটি ভালো প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্যাশন ডিজাইনার কোর্স করা উচিত। বর্তমানে বাংলাদেশে অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেখানে ফ্যাশন ডিজাইনিং এর উপরে শিক্ষা প্রদান করা হয়।

ফ্যাশন ডিজাইনিং কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য আপনাকে ন্যূনতম যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক পাস হতে হবে। আপনি বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি টেকনিক কোর্সের ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারেন। এখানে আপনি অনার্স শেষ হওয়ার পর মাস্টার্স ও করতে পারবেন ফ্যাশন ডিজাইনিং এর ওপরে।

তবে এগুলোতে চান্স পেতে হলে আপনাকে এইচএসসিতে জিপিএ ৫.০০ পেতে হবে। এর সাথে আপনাকে ভর্তি হতে লিখিত পরীক্ষা অংশগ্রহণ করতে হবে। আপনি যদি সমস্ত পরীক্ষায় নিজের মেধা দিয়ে ভালো করতে পারেন, তবে আপনি এ সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফ্যাশন ডিজাইনিং কোর্স করতে পারবেন।

তবে কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সেগুলোতে আপনি যদি ফ্যাশন ডিজাইন কোর্স করতে চান তাহলে ৪ বছর অনার্স কোর্স করতে হবে।এখন আপনাদের মনের মধ্যে এমন প্রশ্ন হতে পারে যে কোথায় কোন প্রতিষ্ঠানের হলে কেমন খরচ হবে বা ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়লে কত খরচ করতে পারে এই সম্পর্কে জানতে নিচে আরো পড়ুন।

ফ্যাশন ডিজাইন পড়ার খরচ

ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়ার খরচ প্রতিষ্ঠান ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সরকারি বেসরকারি অনেকগুলো ফ্যাশন ডিজাইন কলেজ কবে বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের ফ্যাশন ডিজাইনে পড়ার খরচ অনেকটা কম । বাংলাদেশের মধ্যে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়ার কোর্সের খরচ অনেকটা কম হয়ে থাকে।

তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোতে এই চিত্র পুরোটা উল্টো। মিশরের প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়ার খরচ অনেকটাই বেশি। ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে বেসরকারি গুলোতে পড়তে হলে আপনার টিউশন ফি বাবদ ৪ বছরে অনার্স কোর্স করতে ৪ লাখ থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। এছাড়াও আপনি যদি দূরে কোথাও হোস্টেলে থেকে এই পড়াশোনা করতে চান তাহলে থাকা খাওয়ার খরচ তো আছে।
কিন্তু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বা কলেজ থেকে ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করতে গেলে সে ক্ষেত্রে আপনার খরচ লাগতে পারে দুই থেকে তিন লাখ টাকা। এটা সম্পূর্ণ আপনার বিষয় যে আপনি কোথা থেকে ফ্যাশন ডিজাইনিং কোর্স করবেন সরকারি নাকি বেসরকারি।

এছাড়া ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে ডিপ্লোমা কোর্স করতে গেলে আপনার একাডেমিক খরচসহ অন্যান্য খরচ মিলে ছয় থেকে সাত লাখ টাকার মতো খরচ হতে পারে। এছাড়াও কোর্স চলাকালীন সময়ে আরো কিছু বাড়তি খরচ হতে পারে।আপনি যদি বাংলাদেশের বাইরে কোন অন্য দেশে গিয়ে ফ্যাশন ডিজাইন করতে চান সে ক্ষেত্রে খরচের ভিন্নতা এবং খরচ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ফ্যাশন ডিজাইনার এর বেতন

ফ্যাশন ডিজাইনার এর বেতন প্রতিষ্ঠান এবং দক্ষতার উপর ভিত্তি করে হয়ে থাকে। আপনি যদি দক্ষ ফ্যাশন ডিজাইনার হয়ে থাকেন তবে  শুরুতেই আপনি মোটা অংকের বেতন পেতে পারেন। বর্তমানে ফ্যাশন ডিজাইনের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।
ফ্যাশন-ডিজাইনার-হতে-হলে-কি-করতে-হবে
একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের প্রথম অবস্থায় মাসিক বেতন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা হয়ে থাকে। তবে এই বেতন অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার উপর নির্ভর করে পরবর্তীতে আরো বেশি হয়ে থাকে। আপনি যদি লেভেলের একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হয়ে থাকেন তবে বাৎসরিক বেতন সর্বনিম্ন ৪০ লক্ষ থেকে ৯০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন। আর আপনি যদি একজন ভালো লেভেলের ফ্যাশন ডিজাইনার হয়ে থাকেন তবে বাৎসরিক বেতন সর্বনিম্ন ৫০ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। 

তবে পদের তারতম্য অনুসারে ফ্যাশন ডিজাইনারদের বেতন প্রদান করা হয়ে থাকে।এছাড়া বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেসব ডিজাইনাররা কাজ করে থাকে তাদের বেতন মূলত একটু বেশি হয়ে থাকে কেননা তার আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ডিজাইনার হয়ে থাকে এবং আন্তর্জাতিক মার্কেটে চাহিদা অনুযায়ী তারা পোশাক বা আমাদের দক্ষ হয়ে থাকে। এদের বেতন সাধারণত দুই লাখ থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ফ্যাশন ডিজাইন মূলত একটি দক্ষ ও অভিজ্ঞতার পেশা। তাই এই পেশায় যে যত বেশি দক্ষতা অর্জন করবে এবং ভাল কাজ করতে পারবে সে তত বেশি বেতন পাবে।

শেষকথাঃ ফ্যাশন ডিজাইনার হতে হলে কি করতে হবে

আজকের পোস্টে ফ্যাশন ডিজাইনার হতে হলে কি কি করতে হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন। বাংলাদেশে পোশাকশিল্পের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে সেক্ষেত্রে আপনাদের পোশাকের ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে কাজ করে সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে অনেক ভালো একটি পর্যায়ে পৌঁছতে পারবেন। বিভিন্ন গার্মেন্ট, কারখানা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে ফ্যাশন ডিজাইন এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। 

আপনি যদি নিজেকে সমস্ত গাইডলাইন মেনে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারেন তাহলে এই সমস্ত জায়গায় খুবই ভালো অংকের বেতনের চাকরি পেতে পারেন। শুধু বাংলাদেশের নয় আপনি বাংলাদেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে ফ্যাশন ফ্যাশন টিচারের হিসেবে চাকরি করতে পারবেন যদি আপনি নিজেকে একজন দক্ষ ফ্যাশন হিসেবে প্রস্তুত করতে পারেন। মূলত ফ্যাশন ডিজাইনের হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য মূল শর্তই হচ্ছে নিজেকে দক্ষ ও অভিজ্ঞ করে গড়ে তোলা।

আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জানতে পেরেছেন ফ্যাশন ডিজাইন কি,ফ্যাশন ডিজাইনার এর কাজ কি,কোথায় থেকে ফ্যাশন ডিজাইন শিখতে পারবেন, ফ্যাশন ডিজাইন শিখে কেমন টাকা উপার্জন করতে পারবেন এবং ফ্যাশন ডিজাইন করতে আপনার কত টাকা খরচ হতে পারে । তাই আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদের জানার সুযোগ করে দিন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শুরু থেকে শেষ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url