চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার ৩৫ টি কার্যকারী ব্যবহার
চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার ব্যবহার আপনার চুলের সমস্ত সমস্যা দূর করতে দারুন কার্যকারী। কালোকেশী পাতা চুলের গোঁড়া মজবুত করে,চুলকে কালো করে,চুল পরা কমায়,চুলের
জন্য এক কথায় আশীর্বাদ।এই কালোকেশী পাতা ঘরোয়া উপায়ে ব্যবহার করে মুক্তি
পেতে পারেন আপনার চুলের সকল সমস্যা থেকে।
![]() |
চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার ব্যবহার আপনার চুলকে সুন্দর স্বাস্থ্যজ্জ্বল, ঘন ও লম্বা করে
কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই ।মানুষের সৌন্দর্যের অন্যতম অংশ হলো চুল।চুলের
জন্য আপনি বাজারের বিভিন্ন নামি দামি প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকেন কিন্তু
সেগুলো আপনাকে তেমন ফল দেয় না বরং বিভিন্ন ক্ষতিকারক উপাদান থাকায় সেগুলো
আপনার চুলের অনেক ক্ষতি করে থাকে। জেনে নিন চুলের যত্নে কালোকেশী পাতা
ব্যবহার করে আপনি কিভাবে নিজের চুলের যত্ন নিতে পারেন ঘরোয়া উপায়ে।
পেজ সূচিপত্র: চুলের যত্নে কালোকালোকেশী পাতার কার্যকরী ব্যবহার
- চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার ব্যবহার
- কালোকেশী গাছ চিনবো কিভাবে ?
- চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার রসের উপকারিতা
- চুলের যত্নে কালোকেশী তেলের ব্যবহার
- কালোকেশীর তেল তৈরি করার পদ্ধতি
- কালোকেশী তেল ব্যবহারের নিয়ম
- কালকেশী তেল ব্যবহারের উপকারিতা
- কালোকেশী ব্যবহারে সতর্কীকরণ
- চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার ব্যবহার সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে কালোকেশীর পাতার ব্যবহারের কথা না বললেই নয়। চুলের যত্নে কালোকেশীর পাতার
ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকে হয়ে আসছে। কালকেশীর পাতার রস চুলে মাখলে চুল পড়া রোধ,
চুল ঘন কালো হয়। এছাড়াও শারীরিক রোগ ব্যাধি সারাতে কালকেশীর গাছের পাতা
ব্যবহারিত হয়ে থাকে।
আপনি কি মাথার চুল পড়া সমস্যা নিয়ে চিন্তিত? আপনি নানান রকম শ্যাম্পু, তেল
ব্যবহার করেও চুল পড়া রোধে মোটেও কার্যকরী হচ্ছে না। সমস্যা সমাধানের জন্য
ডাক্তারের কাছে গিয়েও মিলছে না কোন কাঙ্ক্ষিত ফলাফল। তাহলে নিচে লেখাগুলো পড়ে
জেনে নিন চুলের সকল সমস্যা সমাধানে এবং চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার কিভাবে
ব্যবহার করবেন।
১।কালোকেশীর হেয়ার টনিকঃ কালকেশীর টনিক তৈরির জন্য ২৫০গ্রাম তিলের তেল এবং
২৫০ গ্রাম নারকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এরপর কালোকেশীর পাতা বেটে রস বের করে
নিন। তৈরি কৃত তেলের মিশ্রণের মধ্যে কালোকেশীর পাতার রস মিশান।এর মধ্যে সামান্য
একটু মেথি, একটা গোটা জবা ফুল, এক মুঠো কারিপাতা এবং একটা গোটা আমলকি দিয়ে
ভালোভাবে সবকটা উপাদান ফুটিয়ে নিন। উপাদানগুলো ফুটানোর পর ঠান্ডা করে
কাঁচের পাত্রে করে রেখে দিন। কালোকেশীর এই হেয়ার টনিক টি নিয়মিত আপনার
মাথায় মাসাজ করলে আপনার মাথা ঠান্ডা হবে চুল পড়া বন্ধ হবে, চুল লম্বা ও কালো
হবে। এমনকি উকুন থাকলে মাথায় এটি মেখে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মাথা বেঁধে রাতে
শুয়ে পড়ুন। পরের দিন সকালে মাথা ধুয়ে ফেলুন দেখবেন সব উকুন মরে গেছে।
২।কালোকেশীর হেয়ার মাস্কঃ কালোকেশীর হেয়ার মাস্ক তৈরির জন্য প্রথমে
কালোকেশী পাতা বেটে নিন। এরপর বেটে রাখা কালোকেশী পাতার মধ্যে ২ চামচ মেথি গুঁড়ো
,নারকেল তেল, টক দই ও ডিমের কুসুম একসঙ্গে মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে নিন। এই
কালকেশীর হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করলে আপনার চুলের অকালপক্কতা রোধ করতে সাহায্য
করবে। এই হেয়ার মাস্কটি আপনি আপনার চুলে মাসে চারবার লাগাতে পারেন।
৩।কালোকেশীর হেয়ার প্যাকঃ কালোকেশী পাতার হেয়ার প্যাক তৈরির জন্য যে সমস্ত
উপাদান লাগবে তা হলোএক কাপ পরিমাণ কালোকেশী পাতা বাটা পাতা বৃক্ষ কান্ড সহ, আমলকি
বাটা, একটি জবা ফুল বাটা, সামান্য কয়েকটা মেথি এক মুঠো কারি পাতা, নিম
পাতা এবং নারকেল বা তিলের তেল।
হেয়ার প্যাক তৈরি করার জন্য প্রথমে একটি পাত্রে নারকেল বা তিলের তেল ২৫০গ্রাম
ঢেলে নিয়ে চুলার তাপে গরম করতে দিন। এরপর তেল ছাড়া সব কয়টি উপাদান একসাথে
মিশিয়ে নিন। তেল কিছুটা গরম হলে এর ভিতরে তৈরিকৃত মিশ্রণটি ঢেলে দিন। এরপর সমস্ত
মিশ্রণ গুলোকে তেলের ভিতরে মাঝারি আছে ৫থেকে ৭ মিনিট ফুটিয়ে নিন।এবার চুলা বন্ধ
করে মিশ্রণটিকেট ঠান্ডা করে ছয় ঘন্টার মত রেখে দিন। এরপর মিশ্রণটি ছেঁকে একটি
কাঁচের পাত্রে সংরক্ষণ করুন।
কালোকেশীর পাতার হেয়ার প্যাক আপনি প্রতিদিন অথবা একদিন পরপর রাত্রে ঘুমানোর
পূর্বে ব্যবহার করুন। যেহেতু এটিপ্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি তাই নিয়মিত ব্যবহার
করলে কোন সমস্যা নেই। এটি ব্যবহারের সময় মাথার তালুতে এবং চুলের গোড়াই প্রবেশ
করে এই এমন ভাবে লাগান। এরপর সমস্ত মাথার চুলে এটি ভালো করে মাখিয়ে নিন। পরের
দিন সকালে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালো করে পরিষ্কার করে ফেলুন।
কালোকেশী গাছ চিনবো কিভাবে?
কালোকেশী গাছ মূলত একটি লতানো ভেষজ উদ্ভিদ। এটি আমাদের বাড়ির আশেপাশে জঙ্গলে
এমনকি রাস্তার আনাচে কানাচেও জন্মে থাকে । এলাকা এবং স্থানভেদে মানুষ এটিকে
বিভিন্ন নামে চিনে থাকে অনেকে এটাকে কেশরাজ বা কালোকেশী বলে।কালোকেশীর পাতার রং
গাড়ো সবুজ বর্ণের এবং ফুল সাদা বর্ণের হয়ে থাকে। কালোকেশীর ফুলের বীজ কাঁচা
অবস্থায় সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে এবং পরিপক্ক হলে ফল কালো বর্ণের হয় ।
কালোকেশীর ফুলের বীজ ছোট ছোট কালো দানার মত হয়ে থাকে। সাধারণত কেশরাজ গাছের
উচ্চতা ১২ থেকে ২০ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। কালোকেশীর কান্ড বেগুনি রংয়ের
এবং লতানো উদ্ভিদের মত দেখতে হয়ে থাকে।কালোকেশীর পাতা খুবই ছোট লম্বায় ৪ থেকে ৫
সে. মি. হয়ে থাকে। কালোকেশীর প্রশাখার শেষ প্রান্তে ২-৩ টি ফুল থাকে।ফুলগুলো
সাদা রঙের হয়ে থাকে। ফুলের মধ্যে থাকা বীজ পরিপক্ক হয়ে কালো বর্ণ
ধারণ করার পর মাটিতে পড়ে উপযুক্ত পরিবেশ পেলে এই বীজগুলো বংশবিস্তার করে থাকে।
চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার রসের উপকারিতা
কালকেশী গাছের রয়েছে অ্যালকোলয়েড স্টেরল, ইউডেলোল্যাকটোন, লিউটেইওলিন,
গ্লাইকোসাইড,ট্রিটারপেনএবং ফাইটেস্টেরল জাতীয় উপাদান। এই উদ্ভিদের পাতা ,কাণ্ড,
ফুল ও ফল সব ব্যবহার করা যায়।তবে জেনে নিন চুলের যত্নে কালকেশী পাতার রসের
উপকারিতা গুলোঃ
- কালোকেশী পাতার রস আপনার স্ক্যাল্পের ভেতরের হেয়ার ফলিকল গুলোকে সক্রিয় করে। এমনকি আপনার মাথার স্ক্যাল্পের ভেতরে রক্তের সঞ্চালন ও বাড়িয়ে দেয়। যার কারণে আপনার চুলের বৃদ্ধি খুব দ্রুত হয়। আপনার পাতলা চুল দ্রুত ঘন করতে এর ভূমিকা অপরিসীম।
- কালকেশী থেকে পাওয়া ভিটামিন ডি, ই এবং আয়রন আপনার চুলের জন্য খুবই উপকারী। এটি আপনার চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- কালোকেশী পাতার ভেতরে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।কালোকেশীর পাতার রস নিয়মিত ব্যবহারের ফলে স্বাভাবিকভাবে হেয়ার ফল ও চলে আসে নিয়ন্ত্রণে।
- কালোকেশী পাতায় বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিতরে ফ্রি ব্যাডিকালসের এর বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
- খুশকির সমস্যা দূর করতে এবং স্ক্যাল্পের সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে নিয়মিত কালোকেশী পাতার রস লাগান।
চুলের যত্নে কালোকেশী তেলের ব্যবহার
কালোকেশী হল একটি ঔষধি গুণসম্পন্ন আয়ুর্বেদিক গাছ। আয়ুর্বেদে এটি বহু
রোগ-ব্যাধি দূরীকরনে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও চুলের নানান সমস্যা দূর করতে
ব্যবহৃত হয় কালোকেশীর তেল।আর এই জন্য বাজারের বিভিন্ন হেয়ার প্রোডাক্টে
কালোকেশীর তেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই কালোকেশীর তেল প্রাচীন কাল থেকে
ব্যবহৃত হয়ে আসছে চুলের যত্নে।কালোকেশী তেলে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা
চুলের যত্নের জন্য খুবই দরকারি। এই উপাদানগুলো চুলের রুক্ষতা, চুলের বিবর্ণ
রং, চুল পড়া, চুল ভেঙ্গে যাওয়া, চুল উঠে যাওয়া, চুলের আগা ফাটা সহ নানা
সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
'কমপ্লিট বুক অফ আয়ুর্বেদিক হোম রেমেডিস' বইয়ে কালোকেশী তেলের ব্যবহার
সম্পর্কে বলা আছে ।সেখানে কালোকেশী তেল রাতে শুতে যাওয়ার সময় মাথায় মালিশ
করা এবং স্ক্যাল্পে ও চুলের গোড়ায় এই তেল ভালো করে লাগানো উচিত বলে লিখা
আছে।কালোকেশীর তেল আপনার হেয়ার ফলিকলকে পুষ্টির যোগান দেবে। গোবিন্দ
গবেষণায় দেখা গেছে যে আমাদের মাথার হেয়ার ফলিকল গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে চুল
পড়ার সমস্যা বৃদ্ধি পায়। তাই আয়ুর্বেদের মত অনুসারে আপনি চুল পড়া
সমস্যায় অনায়াসে কালোকেশী তেল ব্যবহার করতে পারেন যা আপনার চুলকে সুন্দর ও
মজবুত করবে।
কালোকেশীর তেল তৈরি করার পদ্ধতি
আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো জেনে বা চিনে থাকবেন কালোকেশী পাতা সম্পর্কে।
কিন্তু কালোকেশী দিয়ে যে তেল তৈরি করে চুলের যত্ন নেওয়া যায় সেটা হয়তো
অনেকেরই অজানা। আবার হয়তো অনেকে কালোকেশী তেলের কথা শুনেছেন কিন্তু তেল তৈরি
করবেন কিভাবে সেটা বুঝে উঠতে পারছেন না। আপনি খুব সহজেই বাসায় বসে থেকে
ঘরোয়া উপায়ে তৈরি করতে পারেন কালোকেশীর তেল। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব
একটি জাদুকরি কালোকেশীর তেলের রেসিপি যা আপনার চুলের সমস্ত সমস্যা দূর করবে।
তাহলে চলুন জেনে নিন কালোকেশীর তেল তৈরি করার সঠিক পদ্ধতিঃ
কালোকেশী তেল তৈরি করার জন্য প্রথমে একটি পাত্রে এক কাপ নারকেল তেল গরম করতে
হবে। এরপর কালোকেশীর পাতা অথবা কালোকেশীর পাতার গুড়া গরম নারকেল
তেলের ভিতরে এক চামচ পরিমাণ দিয়ে দিন। এরপরে এক চা চামচ মেথি দানা যোগ করুন
গরম নারকেল তেলের ভিতরে। পাঁচ মিনিটের মত মাঝারি আছে মিশ্রণটিকে সিদ্ধ করুন।
পাঁচ মিনিট পর মিশ্রণটি সিদ্ধ হয়ে আসলে চুলা বন্ধ করে দিন। এরপর মিশ্রণটি
ঠান্ডা করুন এবং মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে গেলে একটি কাঁচের পাত্রের সংরক্ষণ করুন। এই কালোকেশী তেলের মিশ্রণটি
সপ্তাহে দুইবার আপনার চুলে লাগান ।
কালোকেশী তেল ব্যবহারের নিয়ম
ইতিমধ্যে আপনি কালোকেশীর তেল তৈরি করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এখন
আপনার মনে প্রশ্ন থাকতে পারে যে কালোকেশী তেল মাখবেন কিভাবে? এছাড়া কালকেশী
তেল ব্যবহারের কোন নিয়ম আছে কি না?কালোকেশী তেল ব্যবহারে যেমন উপকারিতা
রয়েছে তেমনই এই তেল ব্যবহারের কিছু দিকনির্দেশনা বা নিয়ম রয়েছে। নিয়ম
গুলো মেনে চললে তবেই আপনি ভালো ফলাফল পেতে পারবেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে আপনি যদি কালোকেশীর তেল সারারাত লাগিয়ে রাখতে পারেন তাহলে
এটি আপনার চুলের অনেক উপকারে আসবে। কালোকেশীর তেল আপনার মাথায় লাগানোর সময়
মাথার স্ক্যাল্পে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে নিন।
তেল চুলে মালিশ করে নিন। পরের দিন শ্যাম্পু দিয়ে মাথার চুলগুলো ধুয়ে ফেলুন।
তবে আপনি যদি কালোকেশীর তেল শ্যাম্পু করার ২ ঘন্টা পূর্বে আপনার মাথায় ভালো
করে লাগিয়ে রাখেন তাহলেও উপকার পাওয়া যাবে।
কালোকেশীী তেল ব্যবহারের উপকারিতা
চুলের যত্নে কালকেশী পাতার ব্যবহার করে কালকেশীর তেলের উপকারিতার কথা না বললেই নয়। চুল ভালো
রাখার জন্য আপনি অনায়াসে কালোকেশীর তেল ব্যবহার করতে পারেন এতে আপনার চুল
পড়া সমস্যা কমে যাবে। এমনকি অসময়ে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যার ক্ষেত্রেও
কালকেশী তেল অনেক কার্যকরী।
মাথার চুল বাড়তে সাহায্য করেঃকালোকেশী তেল ব্যবহারে আপনার স্ক্যাল্পে ও চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। যা আপনার চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য
করে। কালোকেশীর তেল আপনার চুলের ফলিকলকে সক্রিয় করে তোলে ফলে চুলের বৃদ্ধি
হয় অবিশ্বাস্যভাবে। সারকুলার মোসনে অন্তত ১০ মিনিট যদি আপনি ভালো করে তেল
মালিশ করেন এতে আপনি অনেক ভাল ফলাফল পাবেন।
মাথার চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করেঃ বয়স বৃদ্ধির কারণে, হরমোন জনিত কারণে এমনকি দুশ্চিন্তার কারনেও আমাদের মাথার
চুল ঝরে পড়তে থাকে। কিন্তু অত্যাধিক পরিমাণে মাথার চুল পড়ে গেলে অকালে মাথায়
টাক পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু চুল পড়ার সমস্যা সমাধানে কালো কেসের
তেল কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। বিভিন্ন গবেষণা দেখা গেছে ও বিশেষজ্ঞদের
পরামর্শে জানা গেছে কালোকেশীর মধ্যে কিছু উপাদান রয়েছে যেমন ভিটামিন,
মিনারেল যা সহজে চুল পড়া বন্ধ করতে পারে।
চুলের অকালপক্কতা রোধ করেঃঅল্প বয়সের চুল পাক ধরার নানা কারণে হতে পারে।
প্রাকৃতিক কারণে একটি বয়সের পর আমাদের চুল পাক ধরবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু
অল্প বয়সে চুলে পাক ধরা মোটেও ভালোলাগার নয়। এই চুলের অকালপক্কতা রোধ করতে
কালোকেশী তেল ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও আপনার ব্যবহারকৃত যে কোন তেলের সাথে
কালোকেশী তেল মিশিয়ে নিয়ে একসাথে আপনার মাথার চুলে লাগিয়ে নিতে পারেন। এতে
করে আপনার চুলের অকালপক্কতা কমাতে সাহায্য করবে।
চুল কালো করেঃ কালকেশী উদ্ভিদে হরিটাকি ও জাটামানসি নামক দুটি উপাদান
থাকে যা চুলের প্রাকৃতিক রং ধরে রাখে। এমনকি কালকেশী তেল নিয়মিত ব্যাপারে ধূসর
চুল কালো করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ন্যাড়া মাথায় কালোকেশী পাতার রস
লাগালে চুল কালো হয়।
খুশকির সমস্যা রোধ করেঃ আপনার চুলে খুশির সমস্যা আরো অনেক সমস্যার জন্ম
দিতে পারে। এমনকি খুশকি সমস্যা থেকে আপনার চুলের স্ক্যাল্পে ইনফেকশন পর্যন্ত
হতে পারে, চুল পড়ে যেতে পারে, স্ক্যাল্পে চুলকানি হতে পারে,জ্বালা ভাব
হতে পারে। কালকেশীর তেলে আছে এন্টি ইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টিফাঙ্গাল
উপাদান। যা খুশকির সমস্যা কমাতে পারে এবং ড্রাই স্ক্যাল্পের সমস্যা দূর করতে
পারে।
উকুননাশকঃকালোকেশী পাতার রস চুলের করার এবং চুলের গায়ে ভালো করে লাগিয়ে নিন।
এরপর একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মাথার চুলকে পেচিয়ে রাখুন। আধ ঘন্টা বা এক
ঘণ্টা পর চুল গুলো শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার (উকুনের
মাত্রা অনুযায়ী)ব্যবহার করলে কিছুদিনের মধ্যে আপনার চুল উকুন মুক্ত হবে।
কালোকেশী ব্যবহারে সতর্কীকরণ
আপনাদের মাঝে এতক্ষণ কালোকেশী পাতার রস এবং কালোকেশী তেলের উপকারিতা
সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। কালোকেশী যেমন উপকারী তেমন কালো কিসের
কিছু পার্শ্বপ্রতিকরাও রয়েছে। তবে কালোকেশী পাতার রস সেবনের পূর্বে
অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।নিচে যে সমস্ত বাক্তিদের কালোকেশী
ব্যাবহারের সময় সতর্ক থাকা দরকার আলোচনা করা হলোঃ
- হার্ট বা কিডনি নিয়ে সমস্যার কারণে কেমোথেরাপি নিচ্ছে এমন কোন অসুস্থ ব্যক্তির কালকে সেই ব্যবহার থেকে দূরে থাকা দরকার। তাদের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কালো কিসের ব্যবহার না করাই ভালো।
- কালোকেশীর ব্যবহার গর্ভের সন্তানের জন্য বিষাক্ত হতে পারে।তাই এই সময় কালোকেশী ব্যবহার না করাই ভালো।
- কালোকেশীর রস বা পাতার সেবন করার সময় যদি কারো অ্যালার্জি লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে তার কালোকেশীর রস বা পাতা কোন কিছুই খাওয়ানো যাবে না বা ব্যবহার করা যাবে না।
- আপনার শরীরের রক্তচাপ যদি কমবেশি হয় নিয়ন্ত্রণে না থাকে তাহলে কালোকেশী গ্রহণ না করাই উত্তম।
- আপনার শরীরে যদি টাইপ ২ ডায়াবেটিস থেকে থাকে তবে কালোকেশী আপনার গ্রহণ করা উচিত হবে না।
চুলের যত্নে কালো কেশি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার ব্যবহার সম্পর্কে এই পোস্টটি সম্পন্ন পড়ার পর আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন আপনার স্বাস্থ্য ও
চুলের জন্য কালোকেশী পাতার ব্যবহার উপযোগী কি না। যেহেতু
কালোকেশী আমাদের বাড়ির আশেপাশে আনাচে-কানাচে জন্মে থাকে এতে আমাদের
তেমন কোন অর্থ ব্যয় করে কিনতে হয় না। কালোকেশী পাতা সম্পূর্ণ
প্রাকৃতিক একটি উপাদান। বিনামূল্যে এমন একটি গুণসম্পূর্ণ উপাদান
ব্যবহার করার সুযোগ হাতছাড়া না করাই ভালো।
আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি চুলের যত্নে কালোকেশীর তেলের,
কালোকেশীর পাতার রসের বিভিন্ন উপকার এবং ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বন্ধুদের
সাথে শেয়ার করে তাদের জানার সুযোগ করে দিন। এমন আরো প্রয়োজনীয় তথ্যমূলক
পোস্ট এবং অজানা তথ্য জানতে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন
ধন্যবাদ।
শুরু থেকে শেষ ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url